![]() |
| রয়টার্স ফাইল ছবি |
মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের মিত্র সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে এ পর্যন্ত কোনো মন্ত্রী বাংলাদেশে আসেননি। গ্লাসনস্ত (উদার সমাজ গঠন) ও পেরেস্ত্রোইকার (অর্থনৈতিক পুনর্গঠন) পথে গিয়ে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন বিলুপ্তির পরও ঢাকা-মস্কো সম্পর্কের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। সেই বিবেচনায় সের্গেই লাভরভের সফরটিই হবে রাশিয়ার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম বাংলাদেশ সফর।
কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পর পশ্চিমা চাপে কোণঠাসা রাশিয়া আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা বাড়ানোর বিষয়টি জোর দিচ্ছে। পরিবর্তিত ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বন্ধুত্ব ঝালাইয়ের পাশাপাশি নতুন বন্ধু খোঁজাও রাশিয়ার অগ্রাধিকার। সে ক্ষেত্রে ঐতিহাসিকভাবে পরীক্ষিত বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশকে স্বাভাবিকভাবেই পাশে চাইবে তারা।
চিরাচরিতভাবে কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে নীরব রাশিয়া বছরখানেক ধরে বাংলাদেশের বিষয়ে নিজেদের সরব উপস্থিতির জানান দিয়ে আসছে। সেটি ঢাকায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং মস্কোর নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট করেছে দেশটি।
দীর্ঘদিনের প্রথা ভেঙে রাশিয়ার এই খোলস ছেড়ে বের হওয়ার নেপথ্যে যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরোধ, সেটি রাশিয়া মোটেও গোপন করছে না। বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের রাজনীতিবিদদের ভূমিকাকে নব্য উপনিবেশবাদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে রাশিয়া। মস্কো মনে করে, এ ধরনের পদক্ষেপ একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘নির্লজ্জ হস্তক্ষেপ’।
অবশ্য ঢাকাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘দ্বৈরথের ক্ষেত্র’ বানানোর নেপথ্যে ছিল মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা জাহাজে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য খালাস করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছে রাশিয়া। রুশ জাহাজটির নাম ছিল ‘স্পার্টা-৩’। সেটি পরিবর্তন করে ‘উরসা মেজর’ নাম দিয়ে রাশিয়া রূপপুর প্রকল্পের পণ্য পরিবহন করছিল।
কিন্তু ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গটি উল্লেখ করে কূটনৈতিক পত্র দেওয়ার পর বাংলাদেশ উরসা মেজরকে এ দেশের জলসীমায় ঢুকতে দেয়নি। পরে তৃতীয় দেশে গিয়ে রাশিয়া ওই পণ্য খালাস করতে বাধ্য হয়েছে। ঘটনাটি গত ডিসেম্বরের।

No comments
Post a Comment