নিজস্ব প্রতিবেদন : গণজমিন
তথ্যসূত্র : অনলাইন
হাট্টিমাটিম টিম-
তারা মাঠে পারে ডিম
তাদের খাড়া দুটো শিং
তারা হাট্টিমাটিম টিম--- ছোট বেলায় এই ছড়া কে না পড়েছে।
যদি এখন শোনেন, ছোটবেলা থেকে পেড়ে বা শোনে বড় হওয়া ৪ লাইনের এই ছড়া এখানেই শেষ নয় বরং ৫২ রাইনের। তখন নিশ্চয় বিস্মিত হবেন!
বেশির ভাগ মানুষেরই অজানা এখনো। হাট্টিমাটিম হচ্ছে এক ধরনের অতিথি হাঁস। যারা কিনা শীতের সময় আমাদের দেশের বিভিন্ন জলাশয় এবং মাঠে আশ্রয় নেয়। সেখানেই তারা ডিম পাড়ে। সেখান থেকে বাচ্চা। সেই বাচ্চাগুলো আবার বড় হয়। এরপর সময় হলে তারা আবার উড়ে চলে যায় নিজ দেশে। হাট্টিমাটিমদের খাঁড়া দুটি শিং থাকে। তবে ছড়াকার রোকনুজ্জামান খানের লেখা হাট্টিমাটিম টিম ছড়ার গল্পটা ছিল একটু অন্যরকম। কিছুটা ছন্দ আর মনের খেয়াল মিশিয়ে রচনা করেছিলেন কবিতাটি।
![]() |
| ছবি: হাট্টিমাটিম টিম তারা মাঠে পাড়ে ডিম |
১৯৯৯ সালে মারা যান রোকনুজ্জামান। তবে এখনো বাঙালি তাকে খুব একটা মনে না করলেও তার কবিতা সন্তানকে শেখাতে ভোলেন না। হাট্টিমাটিম টিম ছড়াটির সবগুলো লাইন জেনে নিন। সেই ৫২ লাইনের আসল ছড়াটি এইরকম -
হাট্টিমাটিম
– রোকনুজ্জামান খান
টাট্টুকে আজ আনতে দিলাম
বাজার থেকে শিম
মনের ভুলে আনল কিনে
মস্ত একটা ডিম।
বলল এটা ফ্রি পেয়েছে
নেয়নি কোনো দাম
ফুটলে বাঘের ছা বেরোবে
করবে ঘরের কাম।
সন্ধ্যা সকাল যখন দেখো
দিচ্ছে ডিমে তা
ডিম ফুটে আজ বের হয়েছে
লম্বা দুটো পা।
উল্টে দিয়ে পানির কলস
উল্টে দিয়ে হাড়ি
আজব দু'পা বেড়ায় ঘুরে
গাঁয়ের যত বাড়ি।
সপ্তা বাদে ডিমের থেকে
বের হল দুই হাত
কুপি জ্বালায় দিনের শেষে
যখন নামে রাত।
উঠোন ঝাড়ে বাসন মাজে
করে ঘরের কাম
দেখলে সবাই রেগে মরে
বলে এবার থাম।
চোখ না থাকায় এ দুর্গতি
ডিমের কি দোষ ভাই
উঠোন ঝেড়ে ময়লা ধুলায়
ঘর করে বোঝাই।
বাসন মেজে সামলে রাখে
ময়লা ফেলার ভাঁড়ে
কাণ্ড দেখে টাট্টু বাড়ি
নিজের মাথায় মারে।
শিঙের দেখা মিলল ডিমে
মাস খানিকের মাঝে
কেমনতর ডিম তা নিয়ে
বসলো বিচার সাঁঝে।
গাঁয়ের মোড়ল পান চিবিয়ে
বলল বিচার শেষ
এই গাঁয়ে ডিম আর রবে না
তবেই হবে বেশ।
মনের দুখে ঘর ছেড়ে ডিম
চলল একা হেঁটে
গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে
ডিম গেলো হায় ফেটে।
গাঁয়ের মানুষ একসাথে সব;
সবাই ভয়ে হিম
ডিম ফেটে যা বের হল তা
হাট্টিমাটিম টিম।
হাট্টিমাটিম টিম-
তারা মাঠে পারে ডিম
তাদের খাড়া দুটো শিং
তারা হাট্টিমাটিম টিম।

No comments
Post a Comment